প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ই-মেইলে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন সৌদি প্রবাসী দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- দ্বীন ইসলাম ও কবির হোসেন।
সিটিটিসি বলছে, সৌদি সরকারের সহায়তায় হুমকিদাতা দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সৌদি সরকারের কাছে আবেদন করে ওই দুজনকে গত ২৯ জানুয়ারি দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁরা এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছেন।
আজ রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার কবির হোসেন সৌদি আরবে যুবদলের একাংশের সভাপতি। দ্বীন ইসলামও যুবদলের নেতা।
দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্যই তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে অন্য আরো কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, সেটা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা চলছে।
আসাদুজ্জামান বলেন, হুমকির ই-মেইলটি পাওয়ার পর মিডিয়া সেন্টার থেকে সিটিটিসিকে জানানো হয়। তদন্ত শুরু করে হুমকিদাতা দ্বীন ইসলামকে শনাক্ত করেন সিটিটিসির কর্মকর্তারা।
পরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেওয়ার জন্য তাঁরা একটি নতুন মোবাইল ফোন কেনেন জানিয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, নতুন একটি মেইল আইডি খুলে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন। পরে মোবাইল ফোনটি নষ্ট করে ফেলা হয়। নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয় ই-মেইল আইডি।
দ্বীন ইসলাম ও কবির হোসেন প্রায় ১০ বছর ধরে সৌদি আরবে চাকরি ও ব্যবসা করছেন জানিয়ে সিটিটিসি জানায়, এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউবে তাঁরা দেশবিরোধী নানা অপপ্রচারের সঙ্গে জড়িত।
সিটিটিসি জানায়, ২০২৩ সালের এপ্রিলে বিদেশ সফরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অফিসিয়াল ইমেইলে ইংরেজি ও বাংলায় একটি হুমকিবার্তা সম্বলিত ইমেইল আসে।
ইমেলে হুমকির বার্তায় বলা হয়, ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডিএমপি ও পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানানো হয়। বিদেশ সফরকালেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
ওই ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত ও সৌদি আরবে থাকা রাষ্ট্রদূত ও সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মাধ্যমে সৌদি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়। এরপর দুজনকে শনাক্ত করে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠানো হলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।